রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের রামদিয়া বিএমবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ে জনবল নিয়োগে বাণিজ্যে ও অনিয়মের অভিযোগে ১৪জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার ঃ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের রামদিয়া বিএমবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ে জনবল নিয়োগে বাণিজ্যে ও অনিয়মের অভিযোগে ১৪জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলাটি দায়ের করেছেন, উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আঃ করিম মন্ডলের ছেলে রামদিয়া বিএমবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য মোঃ আব্দুর রহিম মন্ডল। গত ৩ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ বালিয়াকান্দি সহকারী জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিবাদী করা হয়েছে, নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব ও রামদিয়া বিএমবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলীমুদ্দিন শেখ, স্কুলের সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য মোঃ এজাজ কায়সার, জেলা শিক্ষা অফিসার ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সামছুন্নাহার চৌধুরী, নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী অঙ্কন দাস, আয়া হামিদা খাতুন, নিয়োগ বোর্ডের সদস্য মোঃ লিয়াকত আলী রজব, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম শেখ, মোঃ ওয়াজেদ আলী মোল্যা, মোঃ কামরুজ্জামান রতন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোছাঃ শেফালী আক্তার, টিআর সদস্য মোঃ আতিয়ার রহমান, মোঃ রমজান আলী ও অর্চনা রায়।
মামলার অভিযোগে প্রকাশ, মামলার বাদী স্কুলের একজন শুভাকাঙ্খি এবং দীর্ঘ বৎসরের দাতা সদস্য হিসেবে উক্ত স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সাথে যুক্ত আছেন। স্কুলটি একটি ভালো মানের এবং এখানে প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে।
আয়া পদে নিয়োগের জন্য ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর তারিখে এবং ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তারিখে শুন্যপদে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে লোক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এ প্রেক্ষিতে গত ৭ জানুয়ারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস কক্ষে নিয়োগের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে মোছাঃ হামিদা খাতুনকে আয়া পদে, কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে গত ৭ অক্টোবর তারিখে শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস কক্ষে কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে মোঃ হাফিজুর রহমানকে এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে অঙ্কন দাসকে নিয়োগ প্রদান করে বিবাদী গণের মধ্যে প্রধান শিক্ষক ও নিয়োগ বোর্ডের সচিব মোঃ আলিমুদ্দিন শেখ, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী এজাজ কায়সারসহ ১৪জন।
২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর সর্বশেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারী বিধি মোতাবেক ৮ সেপ্টেম্বর কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী নিয়োগ প্রদান করা হবে।
আয়া পদে সর্বশেষ বিধিমোতাবেক নিয়োগ করা হবে মর্মে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু কত তারিখের বিধি বা পরিপত্র বা কোন আইন মতে আয়া পদে নিয়োগ প্রদান করা হবে তার কোন উল্লেখ না করে সর্বশেষ সরকারী বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রদান করা হবে মর্মে উল্লেখ করা হয়। সর্বশেষ নিয়োগ বিধি বলতে ২০১৮ সালের বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালাকে বোঝানো হয়েছে। কারণ এরপর আর কোন নীতিমালা প্রকাশিত হয়নি। এ নীতিমালায় দেখাযায়, বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়া পদের জন্য কোন পদ এবং জনবল কাঠামো বৃদ্ধি প্রাপ্ত নতুন পদে ছকে বর্ণিত সময়ে ও বেতন কোর্ড উল্লেখ নাই। সে কারণে আয়া পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান এবং তৎপরিপ্রেক্ষিতে মোছাঃ হামিদা খাতুনকে যে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে , তা বিধি সম্মত নয়। সে কারণে নিয়োগটি অবৈধ ও বেআইনী হওয়ায় উক্ত নিয়োগটি বাতিল যোগ্য হইতেছে। ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ২ পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। উহা জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ যথাযথ ভাবে অনুসরণ করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এ বিধি পর্যালোচনা করলে দেখাযায়, কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে ২০২০-২১ অর্থ বছরে নিয়োগ প্রদান করতে হবে বলে উল্লেখ আছে। এ পদে মোঃ হাফিজুর রহমানকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে অঙ্কন দাসকে যে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে, তা নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। নীতিমালা মোতাবেক মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে কোন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পদ নেই। এ বিধিমালায় নিন্মমাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ দেওয়া যাবে। তাও ২০২১-২২ অর্থ বছরে নিয়োগ প্রদান করতে হবে বলে উল্লেখ আছে। যেহেতু বিদ্যালয়টি নিন্মমাধ্যমিক বিদ্যালয় নয়, সেকারণে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ প্রদান নীতিমালা ২০১৮অনুযায়ী হয়নি। সে কারণে এ নিয়োগটি অবৈধ ও বাতিলযোগ্য।
এ আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ বিচারক আগামী ১২ নভেম্বর মামলার শুনানী ধার্য্য করেছেন বলে মামলার বাদী জানিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment